আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Tuesday, August 14, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ৬২


ঈদ মাত্র কয়েক দিন বাকি। হাতে গুনে গুনে ঠিক এক সপ্তাহ পরে। আমরা শেষ মুহূর্তে সবকিছু গুছিয়ে উঠতে শুরু করছি। অনেকে শেষ মুহূর্তে ঈদ বোনাস পাওয়াতে ঈদ শপিং সবে শুরু করেছেন। কেউ কিনতে পারছেন, কেউ পারছেন না। কেননা, শখের মূল্য এখন আকাশ ছোঁয়া। আমাদের মধ্যবিত্তরা ঝুকঁছে ফুটপাথের দিকে। একসময় ফুটপাথের কাপড়ের ব্যবসায়ীরা মন খারাপ করে বসে থাকত খাঁ খাঁ করতে থাকা জায়গাগুলোতে। এখন যুগ পাল্টে গেছে। অর্থনীতি বেসামাল তাই, ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। সাধারন মানুষ ঝুঁকছে ফুটপাথের দোকানগুলোতে। টাকাওয়ালা মানুষগুলো বিরস বদনে দেদারসে কাপড় কিনবেন ঠান্ডা এসির মার্কেটে বসে। একসময় পাহাড়সম কাপড় কিনে স্তুপ বানিয়ে তার পাশে বসে বিলাপ ভঙ্গিমায় মন খারাপ করে ভাবতে থাকে, কিছুই তো কেনা হলো না। আমাদের ধনী-গরীবের পার্থক্যতা এতটাই বেশী। যার টাকা আছে সেটি আকাশ ছুঁয়ে যায়, আর যার টাকা নেই সে কাপড়ের কেনার কথা ভুলে গিয়ে দু'বেলা ভালো করে খাবার খাওয়ার কথা ভাবে। আমাদের দেশে বিদেশীরা এসে অনেক বেশী বিভ্রান্তিতে থাকে কেননা, তারা বুঝতে পারে না, এখানে এক রাস্তাতে একজন বিএমডাব্লিও চালায় এবং অন্যজন রিকশা চালায়। অথচ আমাদের সরকার টাকা পায় না বলে বিদেশীদের কাছে হাত পাতে আর বলতে থাকে আমরা গরীব আমরা না খেয়ে থাকি। তবুও আমরা বেঁচে থাকি অনেক স্বপ্ন নিয়ে, সুন্দর একটা ঈদের ভাবনা নিয়ে। যারা ঈদে বাড়ী যাচ্ছেন তারা খুব আনন্দ ও স্বপ্ন নিয়ে বাড়ী যাচ্ছেন। ছোটছোট ছেলেমেয়েগুলো গ্রামের বাড়ীতে অপেক্ষায় আসা দাদা-দাদীর জন্যে এক ঝাঁক চকলেট আর গল্পের ঝুলি নিয়ে যাচ্ছে। যারা টিকেট পান নি তারা হয়ত কেউ বাসের ছাদে কেউবা ট্রেনের ছাদে বসে গ্রামে যাচ্ছেন। কালোবাজারে টিকিটে সয়লাব। আমরা কেউ সোজাভাবে টিকিট খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের মন্ত্রীমহোদয় জোর গলায় বলছে কোথাও কালোবাজারী হচ্ছে না, এখানে মন্ত্রীমহাদেয়কে দোষ দিয়ে লাভ নেই, উনারাতো সাধারন মানুষের মতন গ্রামের বাড়ী যাওয়ার জন্যে টিকিট কাটতে যান না। কালোবাজারী হচ্ছে কিনা, সেটা জানতে উনি ঢাকঢোল পিটিয়ে পুলিশ বহর নিয়ে যাচ্ছেন, প্রতিবারই কালোবাজারীরা হাওয়া হয়ে যাচ্ছে, তারা আগে ভাগে জানেন মন্ত্রীমশাই আসবেন, টিকেট কাউন্টারের লোকজনই তাদের আগে ভাগে জানিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রীমশাইয়ের আগমনী ঘন্টা। উভয় পক্ষের লুকোচুরি খেলা শেষে আবার সেই টিকিটের জন্যে হাহাকার, মারামারি, ঘুরে ফিরে ভুক্তোভুগি সেই আমজনতা। পুরো পরিববার জানে না আদৌ সবাই মিলে বাড়ী ফিরতে পারবে কিনা। কেউ হয়ত ঢাকায় থেকে একলা ঈদ করবে।
আমাদের টিকিট সমস্যা শেষে যাত্রার দিন শুরু হয় সিট দখলের লড়াই, টিকিট হাতে নিয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে বাড়ী যায় আর টিকিট না কেটে অনেকে ছিটে বসে ঘুমায়। বিভিন্ন টার্মিনালগুলোতে আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায় সুযোগ সন্ধানী অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারীরা। শেষ মুহূর্তে হঠাৎ করে বেড়ে যায় সান্ধ্যকালীন ছিনতাই উৎসব। বরাবরের মত ভুক্তভোগী মধ্যবিত্ত রিকসাযাত্রীরা। আমাদের সব কষ্ট ভুলিয়ে আসছে ঈদ, আমাদের সবার মনের ঠিকানা এক জায়গাতে, আমার সবাই মায়ের কাছে যাচ্ছি। 

১৪ই আগষ্ট, ২০১২
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজক্টে ৬২/৩৬৫

পুরাতন লেখালেখিগুলো http://ayonahmed.blogspot.com/

No comments: