হঠাৎ রাস্তায়,
অফিস অঞ্চলে,
হারিয়ে যাওয়া মুখ
চমকে দিয়ে বলে,
বন্ধু কি খবর বল ?
কতদিন দেখা হয় নি " - সুমন চট্টোপাধ্যায়
আজ আমি খুঁজে পেলাম আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধু রেজাকে, শেষবার দেখেছিলাম ৯৮ সালের দিকে, এতগুলো বছর এবং আমার দুর্বল স্মৃতিশক্তির দরুন প্রথমবার চিনতে পারি নি, থতমত খেয়ে ভাবছিলাম, কে হতে পারে । পনের বছর কিন্তু একটা দীর্ঘ সময়, এতগুলো বছর পরেও একটা মানুষ একই রকম থাকতে পারে সেটা আমার ধারনা ছিল না। রেজা নিজের থেকে নাম বলার পর আবার ধাক্কা খেলাম। রেজা ছিল আমাদের কলেজের তুখোড় ছাত্র। নিমিষে সব পড়া বলে ফেলত। সে কিনা বেকার।রেজা কোথাও কাজ না পেয়ে ডেসটিনি করত, অতঃপর টিউশনীর দিকে ঝুঁকেছে। বিয়ে করতে পারে নি, বউকে কি করে খাওয়াবে, বাড়ীতে শুধু একা মা। রেজার বাবা গত হয়েছেন কয়েক বছর আগেই। বাবা সৎ অফিসার ছিলেন বলে গুটি কয়েকটা পেনশনের টাকাটা ছিল শেষ সম্বল। সেটি আজকালকার অস্বাভাবিক খরুচে এই শহরে নিমেষে শেষ হয়ে গেছে। রোজ বাড়ী ফিরে মা আছে বলে একবেলা গরম ভাত খেতে পারছে। সেই পুরানো অভ্যাস বারবার চশমা ধরা , একটু পর স্মিত হাসি দিয়ে নতুন কথায় ফেরার সেই পুরানো ভঙ্গিমাগুলো অবিকল আগের মতন পেলাম। আমরা ফিরে গেলাম কলেজ জীবনে, আমাদের নিজের ভিতরে হাস্যরসগুলো জেগে উঠলো । অনেকগুলো পুরাতন মজার কথা ভেবে অনেকদিন পর প্রাণখুলে হাসলাম। আসলে আমাদের রোজকার ধরাবাঁধা রুটিনের জীবনে থাকতে থাকতে আমরা সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছি । সময় গড়িয়ে গেল। বিদায়ের সময় আমি বললাম, "হারাসনে তুই, ভালো থাকিস যেইভাবে থাকিস"; প্রতিউত্তর পেলাম, "তুইও", বলে স্মিত হাসি দিয়ে রেজা মিলিয়ে গেল ভীড়ের ভিতরে।
৮ই জুলাই, ২০১২
---------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ২৪/৩৬৫
No comments:
Post a Comment