আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Wednesday, July 18, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি- ৩৪

আজকাল পুরানো সমস্যাতে নতুন করে ভুগছি। প্রায়শই ভুলে যাচ্ছি এইটা ওইটা। সকালে আমার এক বন্ধু ফোন দিল অনেক কথা বললো, তথ্য দিলো, আমি মনে করতে পারলাম না তার সাথে আমার পরিচয় সূত্র। পরে জানলাম, আমরা এক কলেজের এক ক্লাসে পড়তাম। ও খুব অবাক হয়েছিল যখন আমি ওকে বললাম, ঠিক চিনতে পারলাম না। 

আমার এই রকম ভুলোমনা অভ্যাস একবারেই ছিল না যে, তা নয় ; শৈশবকাল থেকেই আমি আনমোনা ছিলাম, স্কুল জীবনের শুরুতে প্রথম বকাটা খেয়েছিলাম আমার মা'র কাছ থেকে, মা তখন পড়াচ্ছিলেন আমি অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম। পেনসিল নিয়ে লিখতে লিখতে ভাবুক হয়ে যেতাম। অঙ্ক খাতায় থাকত ছড়া, এখন ভাবলে খুব হাসি পায়। আঁকাআকি খুব আনন্দের সাথে উপভোগ করতাম, গ্রামের দৃশ্য আঁকার পুরানো অভ্যাসটা অনেক দিন ধরেছিল। একবার চেষ্টা করেছিলাম জোছনা রাতে গ্রামের বাড়ীর ছবি আঁকবো, ছবিটা কল্পনাতে ছিল নিঁখুত কিন্তু বাস্তবে আঁকতে গিয়ে বেশী দূর এগুতে পারি নি।

আমার খামখেয়ালীপনায় আমি একবার অনেক সহজ অঙ্ক ভুল করেছিলাম, যার ফলপ্রসুতে আমি অষ্টম শ্রেনীতে অঙ্কতে ভয়াবহ মার্ক পেয়েছিলাম, এতটা ভয়াবহ ছিল যে, আমার শেষ ফাইনাল পরীক্ষাতে কমপক্ষে ৭০ মার্কস পেতে হবে প্রমোশনের জন্যে সেই রকম শর্ত ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমার বাবা-মা নির্ঘুম রাত শুরু হয়েছিল, আমাকে পুরোদমে খাতা কলম দিয়ে দীর্ঘ অনুশীলনী প্রচেষ্টায়, আমি শেষমেষ ৮০ মার্কস পেয়েছিলাম। এই নম্বরটা দেখে আমার অঙ্ক শিক্ষক হেমবাবু স্যার বেশ কয়েকবার আমার খাতা চেক করে দেখেছিলেন, কারন এই নম্বরটা তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছিল। শেষমেষ উনি সবাইকে খাতা দেখিয়ে বলেছিলেন, অয়ন আজকে আমাকে একটা জিনিষ শিখিয়ে দিল মেধা কখনও সংখ্যা দিয়ে যাচাই করা যায় না, নিজের ইচ্ছা শক্তির ব্যাপারটাই আসল। আমিও খুব ভড়কে গিয়েছিলাম কেননা আমিও অবাক ছিলাম এত নম্বরের পাওয়ার পর তবে ৭০ মার্কসের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। এর পরে আমার মন খারাপ হয়েছিল খামোখা সবাই এতদিন কষ্ট পেল আমার জন্যে।

অফিস ডেস্ককে আমার অসংখ্য স্টিকার কাগজের টুকরো যেখানে আগামী দিনের কর্ম পন্থা লেখা থাকে, কেননা, হয়ত আগামীতে ভুলে যেতে পারি, যেমনটা আমি আজ মনে করতে পারি না , অনেককের নাম, যারা আমার এককালে কাছে ছিল, অনেককে ভুলতে যাচ্ছি যাদেরকে আমি কাছে পাচ্ছি না।

১৮ জুলাই, ২০১২
--------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজক্টে ৩৪/৩৬৫

No comments: