আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Monday, July 9, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ২৫


আজ লেখার মতন মুড নেই তেমন একটা, কি নিয়ে লেখবো সেটা ভাবার কিছু পাচ্ছি না। রোজ কিছু না কিছু লেখব বলে কথা যখন দিয়েছি তখনতো কিছু একটা হলেও তো আমাকে লিখতে হয়। যাক পুরানো কথা মনে পড়ে গেল, ছোটবেলার লেখালেখি বিষয়ক সুখ স্মৃতি, লেখালেখি প্রথম হাতে খড়ি ছিল আমার মার হাতে, আমাকে পেনসিল ধরে বড় বড় করে বর্ণমালা লিখতে শিখিছিলেন। আমি নাকি খুব অলস প্রকৃতির ছিলাম, অ লিখতে লিখতে আ শুরু করতে না করতে টেবিলে ঘুম দিতাম। আম্মা জাগিয়ে দিতেন অর্ধঘুম থেকে, আমি ঘোর লাগা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। আমার মা'র প্রচন্ড একাগ্রতায় আমি বর্ণমালা লেখাতে পুরোপুরি আয়ত্বে নিয়ে আসলাম। তারপর আমার মায়ের শুরু হলো হাতের লেখা সৌন্দর্য করার প্রচেষ্টা , স্কুলের হোমওয়ার্ক থেকে বাসার এক্সট্রা হোমওয়ার্ক আমার লেখার চেহারা পাল্টে দিলো, আমার মা প্রথম দিকে খুব ভুগেছিলেন, কেননা, আমার লেখা নাকি প্রথম দিকটা ভয়াবহতায় রূপ নিয়েছিল যে, মা অনেক দুশ্চিন্তাতে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছিলেন , বাবা কিঞ্চিত আনন্দিত হয়েছিলেন, যেহেতু লেখা ভয়ঙ্কর, ভবিষ্যতে ছেলে বোধহয় ডাক্তার হবে।  শেষমেষ, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ক্লাস ৪ বোধহয় আমার লেখার একটা ছন্দ পাওয়া গেছে, এর আগ পর্যন্ত ছিল গোয়াল পালানো গরুর মতন। লেখতে লেখতে আমি একসময় প্রচন্ড বই পড়ার নেশায় আসক্ত হলাম, আমাদের ঘরের ভিতরে একগাদা বই পেলাম শুরু করলাম পড়া, প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি পেরুতে না পেরুতে দাদীর পড়ার টেবিলের নীচে "বেগম" , মা'র "আনন্দবাজার", বাবার "টাইমস", চাচার "দৈনিক সংবাদ", ফুপুর বিচিত্রা, সব কিছু গ্রোগাসে গিলে ফেললাম। পড়তে পড়তে একসময় গণিতের প্রতি ঘৃণা বাড়তে লাগল কমতে লাগল নাম্বার। বাংলা-ইংরেজীতে ফলাফল ভালোই ছিল, আমার গণিতের ভয়াবহ রূপ মা-বাবার দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়ালো। শেষমেষ এই গণিতের প্রতি ক্ষোভ নিয়ে ত্যাগ করলাম ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়র হওয়ার ইচ্ছা। সেই স্কুল জীবনে লিখে ফেললাম কবিতা। স্কুল ম্যাগাজিনে এক সময় সেই কবিতা স্থান পেল, আনন্দে চোখে পানি চলে এল। তারপর থেকে কলেজ ম্যাগাজিন, আরো কয়েকটা ম্যাগাজিনে লেখা চলে এল। লেখালেখি নেশার আবত্তে বন্দি হয়ে গেলাম আর বেরুতে পারলাম না। যার কারনে এখনও লেখছি।  


৯ই জুলাই, ২০১২
---------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ২৫/৩৬৫

No comments: