আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Monday, July 16, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ৩২


আজকাল দেখি, কেউ কিছু শেয়ার করতে চাচ্ছে না, হয়ত চাচ্ছে তাও ভয়ে ভয়ে, কারন এখনকার সময়ে শুনছি অনেকেরই যে কোন জিনিষ মেরে দেওয়ার অভ্যাসটা অনেক বেড়ে গেছে। যেমন: ভালো বই , ভালো মুভি, ভালো কিছু গান কিংবা শখের ভালো কিছু কেউ আজকাল দিতে চায় না। যদি দেয় তাহলে আর ফেরত পাচ্ছে না। এজন্যে আমাদের ভিতরকার আত্মবিশ্বাসগুলোর ভিত্তিতে বড়রকম ধাক্কা লাগছে। আমাদের ভিতর আন্তরিকতায় বড় বড় ফাঁক ফোকড় তৈরী হয়ে যাচ্ছে, যার জন্যে এ ওর সাথে তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া-ঝাটি করছে। 


আমি যৌথ পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য হয়ে বেড়ে উঠেছিলাম, সাহিত্য, লেখাপড়া, খেলাধুলার প্রতিটি ব্যাপারে হাতে খড়ি আমাদের সেই পুরানো দোতালা বাড়ীর প্রতিটি প্রিয়মানুষগুলোর। 


দাদুর কোল থেকে শিখেছি আহ্লদ কিভাবে করে, দাদু আমার জন্যে রোজ সন্দেশ নিয়ে আসতেন। দাদুর কাছ থেকে শিখেছি স্ট্যাম্প কালেকশন করা। দাদার কাছে অনেক চিঠি আসত আমি সেগুলো ছোট কাঁচি দিয়ে কেটে একটা খামের ভিতর জমিয়ে রাখতাম। 


বাবাও স্ট্যাম্প কালেকশন করতেন বলে আমাকে পুরো স্ট্যাম্প কালেকশনের অভ্যাসটা তৈরী করে দিয়েছিলেন। নতুন স্ট্যাম্প বই পেলাম। শুরু হল পানিতে ডুবিয়ে রেখে খবর কাগজে লাগিয়ে শুকানো তারপর আঠা লাগিয়ে বইতে লাগানো শুরু। আমার কাছে অনেক স্ট্যাম্প রয়ে যেত যেগুলো আমার অন্য ভাইবোনদের কে দিয়ে দিতাম। এইভাবে আমাদের ভিতর শেয়ার করার মানসিকতা গড়ে উঠে ছিল। 


মা আমাকে বই পড়ার অভ্যাসটা তৈরী করে দিয়েছিলেন ছোটবেলা থেকে মায়ের হাত ধরে আমি বইমেলা যেতাম, এত বই কিনতাম, আমার ছোট হাতপাগুলো অবশ হয়ে যেত কোন সময় বইয়ের ভারে পড়ে যেতাম বারবার। তাও মাকে আমার বই নিতে দিতাম। নতুন বইয়ের গন্ধ আমার আনন্দ চোখে জল চলে আসত। আমি সেই বইগুলো পুরানো ক্যালেন্ডার দিয়ে মলাট করতাম। আমার পড়া শেষ হলে বন্ধুরা পড়তে নিত, আমার ভাই বোনরা সবাই মিলে পড়তাম। গান শোনার ক্ষেত্রে অনেক রেকর্ড করতাম, আমাদের বন্ধু মহল সবাই মিলে একটা গানের আর্কাইভ গড়ে তুলেছিলাম। সবার কাছে সবার গান থাকত। তখন সবাই আমরা টাকা পয়সা খরচ করে অনেক কিছু শেয়ার করতাম। আজকালকার দিনে সব কিছু বিনে পয়সায় পাওয়া যায় গান, বই, মুভি। কিন্তু কেউ শেয়ার করে না। কেননা, তাদের কোন লাভ নেই।  


১৬ জুলাই, ২০১২
---------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ৩২/৩৬৫

No comments: