আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Monday, October 8, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ১০২

ফুটপাথে চলতে গিয়ে আমার একজনের সাথে হালকা ধাক্কা লাগল। আমি নিজের থেকে 'সরি' বললাম। যাকে বললাম তারঁ চেহারাতে ছিল রাজ্যের বিরুক্তি। আমি মুচকি হেসে চলে আসলাম। ফিটফাট টাই পড়া সেই লোকটার ভিতর কোন প্রকার আন্তরিকতা, শিষ্টাচার খুঁজে পেলাম না। 

আমাদের দেশের জনসমষ্টির শিক্ষিত, 

সেমি শিক্ষিত, অশিক্ষিত এ তিন ধরনের মানুষ আবার ভদ্র অভদ্র দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত অনুপাতে শহরের লোকজন গ্রামের লোকজন থেকে এগিয়ে থাকে। কেননা, সর্বোচ্চ সুবিধা প্রাপ্তি শুধুই শহরমুখী। গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা রোজ রোজ স্কুলে বসে নিজেরা মিলে খেলাধুলা করে, গল্প করে, কেননা তাদেরকে পড়ানোর জন্যে শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের সবাই শুধুমাত্র ইংরেজী ও অংকের শিক্ষকের অভাবে ঝরে যাচ্ছে। অথচ তাদেরকে ধর্ম শিক্ষা পড়ানোর লোকের অভাব হচ্ছে না। সবাই নব্বই ভাগ নম্বর পাচ্ছে যা পরবর্তী জীবনে কোন কাজে আসছে না। সবার বড় হওয়ার সাথে সাথে নতুন করে ধর্মকে শিখতে হচ্ছে। আমরা মানুষগুলো প্রাথমিক শিক্ষাটা পেয়ে থাকি নিজের পরিবার থেকে, যেখানে আমাদেরকে আন্তরিকতা, শিষ্টাচার এই সব কিছু শেখানো হয়। আমরা স্বাবলম্বী হয়েও সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে স্কুল কলেজ ও ভার্সিটি জীবনে শৃঙ্খলা বিষয়টি রপ্ত করানো হয়।

স্বাবলম্বী কেউ কেউ হয়তো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে নিজেকে অহংকারী করে তুলে তখন আন্তরিকতা ও শিষ্টাচারের অনুপাত কমে আসে। ফলে নিজের ভিতর জটিলতাগুলো বেড়ে উঠে। বিভিন্ন উৎসবগুলোতে আমি ফটোগ্রাফি করতে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াই। কালভদ্র রাস্তাঘাটে কিছু কিছু ফটোগ্রাফারের সাথে দেখা যায় আমি আপন করে নিয়ে আন্তরিকতার হাসি হেসে কুশল জিজ্ঞেস করি, কেউ জবাব দেন কেউ দেন না, আবার কেউ বিরক্ত হন তার মূল্যবান সময়টুকু আমি কেড়ে নিয়েছি। অনেকে অনেক বড় চাকরী করেন, ভালো মতন থাকেন কিন্তু শিষ্টাচার শব্দটা তাদের মতন লোকের মাথায় কাজ করে না।

আমাদের সমাজে এ ঘটনা খুবই সাধারন ঘটনা, একই ফ্লাট কিংবা বাড়ীতে পাশাপাশি থাকছি, কিন্তু তাদের চিনতে পারি না। কেননা, কখনো দেখা হয় নি। হয়ত ঈদেও দেখা করিনি। আমাদের ভিতর দ্বিধা আমাদের বাঁধা দিয়ে বলে, "কি দরকার"? এই দরকার শব্দ আমাদের ভিতর ঢুকে গিয়ে আমাদের স্বার্থপর করে দিয়েছে। এই জন্য আমাদের সমাজে স্বার্থহীন মানুষগুলো মূল্যহীন হয়ে যাচ্ছে। তাই মানুষের ভিতর রেষারেষি বাড়ছে। আমাদের সব জায়াতে সংঘর্ষ বাড়ছে। এমন কোন জায়গা নেই যেখানে কেউ না কেউ ঝগড়া করছে, কেউ আন্তরিকতায় সমাধানে এগিয়ে আসছে না। বরঞ্চ সেটি মারামারি, খুনোখুনি পর্যায়ে চলে যায়। আমরা শিক্ষিত হয়ে জন্তুর মতন চালচলন করি।

২৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২
-------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ১০২/৩৬৫

No comments: