আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Monday, October 8, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ৮৫

আজ ভাবছিলাম একটু অন্যরকম কিছু লিখবো। জীবনের গল্প নিয়ে লেখা সত্যি খুব দুরূহ ব্যাপার। আমাদের জীবনটা একেকটা গল্প। আমাদের জীবনের ঘটনাগুলো নিয়ে অনেক কিছু লিখে ফেলা যায়। 

আমার কোম্পানীর পন্য বিজ্ঞাপনের জন্যে গল্পভিত্তিক কিছু একটা লেখতে হয় এই গল্পটা সেইরকম কিছু, আমাদের কোম্পানীতে ডিপি ইবাইক

 বলে ইলেকট্রিক বাইক রয়েছে সেটি সকলের কাছে পরিচিত করতে এই গল্পটা লিখেছি।

স্বপ্ন কখনো কখনো স্বপ্ন নয়
-------------------
ফারহানা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। রোজ ছয়টায় এসে বাসের জন্যে বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে। বনানী হেড অফিসে পৌছাতে ভোরবেলাতেও ঘণ্টা খানিক সময় লেগে যায়। তাও যদি সময় করে বাস আসে। অফিসের নিয়ম খুবই কড়াকড়ি। ঠিক আটটায় ঢুকে যেতে হয় নইলে মাইনে কেটে নেয় দিন শেষে। ছোট ছেলে অর্ণবকে বাড়ীর কাছেই স্কুলে দিয়ে বরের খাবার রেডি করে ফারহানা বাস স্ট্যান্ডে চলে এসেছে। আজ অফিসে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং। সাড়ে ছয়টা বেজে গেছে অথচ বাসের দেখাই নেই। আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টেনশনে অস্থির। মাসের শেষে টাকার কমতি। সি.এন.জি চালকগুলো ভাড়া হাঁকাচ্ছে ইচ্ছে মতন। কেউবা ফিরেও তাকাচ্ছে না। কোন মতন তিনশত টাকাতে একজনকে রাজী করিয়ে অফিসের দিকে রওনা দিল। যা বেতন তাতে পাঁচশত টাকা দিয়ে যাওয়া আসার খরচ রীতিমতো ভয়ানক বিলাসিতা । নিজের শখ বলে কিছু ছিল সেটা ফারহানার একদম মনে পড়ে না। তাও অনেক ইচ্ছে করে ছোট্ট সোনা মনির জন্যে একটা কম্পিউটার কিনে দিতে। উৎসবে বরের জন্যে সুন্দর পাঞ্জাবী। কোন কিছুই হয় না। খালি আপন মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে যায়। আজ অফিসে ফারহানার মন খারাপ করে বসে আছে। টিভিতে খবর এসেছে শেয়ার বাজারে খুব গণ্ডগোল। গাড়ি-বাস ভাংচুর চলছে। বেশ কয়েক দফা পুলিশ-বিনিয়োগকারীর ভেতরে সংঘর্ষ হয়েছে। পুরোপুরি থমথম পরিবেশ। ঘড়িতে এখন পাঁচটা বাজে। অফিস কিছুক্ষণ বাদে ছুটি হয়ে যাবে। আজও বাড়ী ফিরতে নয়টা বেজে যাবে। ছেলেটা আজও ক্ষুধা পেট নিয়ে ঘুমিয়ে যাবে। ফারহানাকে চুপচাপ দেখে শায়লা অফিস কলিগ জিজ্ঞেস করল, কি আপা ! মুখ এমন শুকনো দেখাচ্ছে কেন ? আর বলেন না আপা , শুধু অফিস আসতে যেতে মাসের শেষের আগেই বেতন শেষ হয়ে যাচ্ছে। খুবই দুর্বিষহ জীবন। ইচ্ছে করে সব রেখে বিদেশ চলে যাই। কিন্তু ওখানে গিয়ে সম্মান নিয়ে চাকরী করতে পারবো কিনা তাঁর কোন নিশ্চয়তা নেই। আরে বোকা মেয়ে। তুমি তো জানো না, মেয়েরা এখন অনেক স্মার্ট হয়ে গেছে। আমার বোনের মেয়ে সাংবাদিক দীপ্তি ডিপি ইবাইক চালিয়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াচ্ছে। একদম বিনে পয়সার মতন। তোমার যেখানে তিনশত টাকা মুহূর্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে সেখানে মাত্র তিন টাকা খরচ হচ্ছে। একবার ভাবো ফারহানা রোজ রোজ যে টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে সে টাকা জমিয়ে খোকার জন্যে কত কি কিনতে পারো । ফারহানার মন নিমেষে ভালো হয়ে গেল।


বছর খানেক বাদে ফারহানার প্রমোশন হয়েছে, বেতন বেড়েছে। ফারহানা এখন অনেক বেশী আত্মনির্ভরশীল হয়েছে। নিজেই ডিপি ইবাইক চালিয়ে অফিস করছে, বাজার করছে, ছেলেকে সময় মতন স্কুলে দিয়ে আসছে নিয়েও আসছে । ফারহানার বরও একটা দুর্জয় ডিপি ইবাইক কিনেছে। ফারহানাকে নতুন শাড়ী কিনে দিয়েছে। আগামীকাল বাইকে চড়ে তিনজন মিলে ঘুরবে সারাদিন।

৬ই সেপ্টেম্বর ,২০১২
-------------------------------------------------------------------------- লেখালেখি ৩৬৫ প্রজক্টে ৮৫/৩৬৫

No comments: