আমার একান্ত কিছু শব্দের মানুষগুলো

আমার একান্ত কিছু অনুভূতি আমার কলমের সাথে ভাব জমায় আমি তাদের সাথে পথ পাড়ি দেই একাকী

Monday, October 8, 2012

অ আ আজকের লেখালেখি - ১০৭

সেবার যখন প্যালেষ্টানী মানুষগুলোর উপর নির্বিচারী অত্যাচার চলছিল। পাখীর মতন ধরে ধরে গুলি করে মেরে ফেলছিল। তখন আমাদের তথা কথিত শান্তির মিশন নিয়ে চলতে থাকা আরব বিশ্ব নামক বোবা পুতুল ক্লাব সেই পুরানো ভূমিকাতে ফিরে গেল। আমি জানি না আরব বিশ্ব সম্মেলনে কেন এসব বিষয়গুলো মূখ্য আলোচনা হয় না। আমাদের দেশের প্রধানমন্
ত্রী অনেক সেজেগুজে সেখানে বেড়াতে যান, ডিনার করেন, ভাষন দেন, আবার দেশে ফিরে আসেন। উনার ভ্রমন ব্যয় লাখ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়, আমাদের করের থেকে উনাকে বেড়ানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। আমাদেরকে উল্টা ভয় দেখানো হয় কর আরো বাড়বে। অনেকটা আগের যুগে রাজার আমলে খাজনা বৃদ্ধির মতন । আমরা সহ্য করি, কেননা আমরা অনেক শান্তিপ্রিয়, আমরা মরেও যাই তবুও অশান্তি করি না। তবুও আশার কথা আমাদের দেশ অনেক দেশের সুন্দর, আমাদের মানুষগুলো খুবই সহজ সরল। আমাদের দেশে একটাই সমস্যা আমাদের দেশের শাসনতন্ত্রগুলো আমরা প্রতিবারই আমরা ভুল মানুষের হাতে তুলে দেই, কেননা, সেই ভুল মানুষগুলো ব্যতীত আমাদের হাতে কোন বিকল্প নেই। তবুও আশায় আছি, আমাদের উত্তরসূরীরা একটা দারুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আজ সিরিয়া, প্যালেস্টাইন, ইরাক সর্বত্রই হত্যাযজ্ঞ চলছে। কেউ তাদের রক্ত ঝরা বন্ধ করতে পারছে না। কেউ বন্ধ করতে চাইছে আবার কেউ চাইছে না। তাই অবিরত রক্ত ঝরছে। তাদের জন্যে আমি এই কবিতাটা লিখেছিলাম আমার একান্ত নিজস্ব অনুভূতি থেকে। 



খেলার বিকালে বারুদের গন্ধ
--------------------------------------------
শরতের আকাশ কিঞ্চিত বাদামী ,
প্রায়শই আজকাল নীল থাকে না ।
তুলতুলে মেঘে আমি সাদা ভাগটুকু পাই না
ওখানেও কালো কালো ছোঁপ একটু ময়লাটে ;
গতকাল কিন্তু এরকম ছিল না ।
স্পষ্ট দেখে এসেছিলাম সবুজ মাঠে একলা প্রজাপতি ,
ছোট ছোট পোষা কুকুরগুলো হাঁটছিলো পায়ে পায়ে ,
খেলার মাঠ জুড়ে অসংখ্য ক্ষুদে খেলুড়ে
কারো পায়ে ফুটবল ,
কারো বুকে আঁগলে থাকে ঘুড়ি ,
একটু লম্বা লম্বা পা ফেলে দ্রুত হেঁটে যায় বয়স্ক দেহ ,
কোণায় কোণায় কংক্রিটের বেঞ্চে এসে বসে অনাগত শিশুর মা ,
নির্মল হাওয়ার খোঁজে একটু জিরায় ক্লান্ত পথচারী ,
সবারই ভিতর আরেকটু বেশী ভালো থাকার আকাঙ্খা ।
আলো মিইয়ে গিয়ে যখন সন্ধ্যা নামে ,
কুয়াশার সাথে তখন ভাব করে ঝি ঝি পোকার দল,
এগুলো কিন্তু অতীত গত দু’দিনের কথা ।
বর্তমান আজ সেই জায়গাগুলোতে গণকবর ;
যে ছেলেটা ঘুড়ি নিয়ে বসে থাকত
ও ঘুড়ি হাতে নিয়ে মাটির নিচে চাপা পড়েছিল
একটা বোমারু বিমানকে বন্ধু ভেবে টক্কর দিতে ঘুড়ি উড়িয়েছিল ।
অনাগত শিশুর মা এখন মুমূর্ষ,
অনাগত শিশুটাকে বাচাঁনো যায় নি, মাকে বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টা।
গুটি ক’টা ডাক্তারের অসহায় মুখমন্ডল,
হাসপাতালগুলোতে সম্মুখে লাশের মিছিল ,
কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ বাড়ীর ছোট ছেলে , কেউ মিষ্টি গানের মেয়ে
গতকালে রাতের গুলির তীব্রতা ও বারুদের পোড়া ঝাঁ ঝাঁ গন্ধে
নিস্তবদ্ধ শেষ বিকালের খেলার মাঠ অসংখ্য গর্তের কলোনি , ভাঙ্গা গুঁড়ো স্কুল দালান।
কাল বিকালের কেউ নেই সেই ছেলে, সেই শিশু, সেই মা, সেই বাবা, সেই ক্লান্ত দাদু।

আমরা আজ ওদের কবর খুঁড়ছি
নীরবে নিভৃত শক্ত চোখের জলে। 


২৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২
---------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ১০৭/৩৬৫

No comments: